জীবন সম্পর্কে কখনও এমন ভাবে কিছু লেখা হয়নি!আজকেই প্রথম এমনভাবে তুমি ও সবার উদ্দেশ্যে কিছু লিখতেছি!
আমার প্রিয়তমা, তুমি আমার জীবনে অনেকটা অতিথি পাখির মত চলে এসেছিলে। আমি কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই তুমি আমায় বললে “আপনি আমায় বিয়ে করবেন?” । তোমার সাথে আমার কথা হয়েছিল মাত্র এক সপ্তাহ। এতেই তুমি বলো, আমার কথা , আমার ব্যবহার নাকি অনেক ভালো লাগছে তোমার। তো আমি তোমার ওই কথার প্রেক্ষিতে বললাম, “শুধু কি বিয়ে করলেই হবে, নাকি ভালোবাসা ও লাগবে?”। তুমি বললে অবশ্যই ভালোবাসা ও লাগবে, তখন বললাম তাইলে চলো আগে ভালোবেসে দেখি , ভালবাসতে পারি কি না! তবে আমার কিছু কথা আছে, যদি বিয়ের কথায় আসো আমার কিন্তু ৪-৫ বছর সময় লাগবে, কারণ আমার ফ্যামিলির অবস্থা তেমন ভালো নাহ, আর আমি আমি কোনো কর্ম না করলে বিয়ে করার উপায় নেই।
তোমার কথাটা ছিল, আপনার জন্য সারাজীবন অপেক্ষা করা লাগলে করবো তাও আপনাকেই লাগবে আমার।”তবে আজ কেনো তুমি আমায় চিরদিনের জন্য এক করে দিয়ে নিজের মতো চলে গেলে? তোমার সাথে আমার কথা তো এরকম ছিল নাহ। এমনটা কিভাবে করলে?”
এভাবেই শুরু হয়েছিল তোমার আর আমার সেই পথচলা।বলেছিলাম এই পথ কিন্তু সহজ হবে নাহ, তাও তোমার একটাই কথা যা করা লাগে করবো তাও আপনাকেই লাগবে। তোমার এই একটি কথায় আমার সকল কিছু আটকে গিয়েছিল , আমি তোমার সকল কিছু বিশ্বাস করে নিয়েছি সবসময়। তোমায় কথা দিয়েছিলাম চলার পথে কেউ ভুল করলে, আমরা দূরে যাবনা। দুজনের কথার মাধ্যমে সবকিছু সমাধান করে নিবো। আজকে আমাদের পথচলা ১ বছর ৪ মাস ৩ দিন। এর মাঝে তোমার সাথে আমার সেই প্রথম ১ বছর ১ মাস ৪ দিনের একটা দিন ও কথা বন্ধ করে থাকা হয়নি। যদি কখনও একটু রাগারাগি হয়েছে, সেইটা সেই দিন এবং রাত ১২ টা এর আগে সব কিছু সমাধান শেষ করে দুজন ঘুমিয়ে পড়তাম , যেনো পরের দিনটা আমাদের অনেক সুন্দর হয়। এমন না যে এর মাঝে তুমি বা আমি কোনো ভুল করিনি।
তোমার একটা বিষয় প্রথম থেকেই এলোমেলো ছিল যে, তুমি নিজে কোনো বিষয়ে কখনও কোনো ডিসিশন নিতে পারতে নাহ। আমি তোমাকে এই বিষয়ে অনেকবার সতর্ক করেছি , যে দেখো মানুষ যতই কাছের হোক, সে যে সবসময় তোমায় ভালো কিছু করতে বলবে তা কিন্তু না। তুমি সব শুনতে কিন্তু কাজে লাগাতে নাহ।
আর এভাবেই তুমি অন্যের কথা শুনে অনেকবারই ভুল করে বসো, কিন্তু আমি ঐযে কথা দিয়েছিলাম যে ভুল করলে ছেড়ে না গিয়ে বুঝাবো। তো আমি ভুল উল্লেখ করে বললে তুমি সব বুঝতে আর শিকার করতে।
তোমার আর আমার মাঝে হওয়া আর একটি প্রতিশ্রুতি ছিল , তা হলো “বিয়ের আগে আমরা কখনোই কোনো ভুল কাজ (অনৈতিক কাজ) করবো নাহ”। আল্লাহ্ তায়ালার হাজার হাজার শুকরিয়া যে আমরা কখনোই কোনো ভুল কাজ করিনাই। আর এটাই আমাদের ভালোবাসার সত্যতা, আর এটাই আমাদের ভালোবাসার পবিত্রতা। আর এই কথা গুলো শুধু এখানে লেখা ই না , আমায় দুনিয়ার যেকোনো জায়গায় গিয়ে বলতে বলে নির্দ্বিধায় বলতে পারবো। আর এটার জন্য আমার যত কিছু সহ্য করতে হবে করবো। এটার মানে এই না যে তোমার আমার দেখা হয়নাই , বা কখনও কাছে আসিনাই। তোমার সাথে আমার যতবার দেখা হয়েছে তার সাক্ষী তোমার কপাল আর আমার ঠোট।তোমার সাথে আমার যতবার দেখা হয়েছে তোমার কপালে চুমু দিয়ে শক্ত একটি আলিঙ্গন দিয়ে শুরু হয়েছে আমাদের গল্প কথা। তোমার সাথে আমার অনেকদিনই দেখা হয়েছে বেশিরভাগ দিনেই আমি তোমায় বুঝাতে এসেছি হয়তো কোনো বিষয়, হয়তো তোমার কোনো ভুল শুধরাতে , হয়তো আমার কোনো ভুল শুধরাতে, তোমার লেখাপড়া বিষয়ে, নয়তো পরিবারে তোমার চলাচল , কিভাবে চললে তুমি আমার জন্য থাকতে পারবে , এসকল সহ আরো বিভিন্ন বিষয়, সারা জীবনের তোমার আমার সকল স্বপ্ন ইত্যাদি নিয়ে কত গল্প করেছি। আর সেই তুমি আমাদের সকল স্বপ্নে ধুলো দিয়ে , আমাদের স্বপ্নের ঘর ভেঙে দিয়ে আমায় চিরতরে একা করে চলে গেলে? একটা বার ও তুমি আমার কথা ভাবলে নাহ? এতটাই পাষাণ তুমি। আর নিয়তি আমার সাথে তোমায় নিয়েই খেলা করলো।
যাইহোক, আমাদের এইযে ১ বছর ১ মাস ৪ দিন চলার পথে অনেক বড় বিপত্তি এসেছে , বিশেষ করে আমার এখানে যখন বেশিরভাগ মানুষ জানতে পারে যে আমি আর তুমি সম্পর্কে আছি, আমায় এখনকার সবাই নিষেধ করে, আর সেই নিষেধ টা কখনও তোমায় ভেবে করেনি কেউ।সবাই আমাকে এটাই বলেছিল তোমার বাবা ভালো মানুষ নাহ, সে কোনো মানসত্ব বোধগম্য ব্যক্তি নাহ। সে যদি জানতে পারে তাইলে আমার কিংবা তোমার যেকোনো সময় যেকোনো ক্ষতি করতে পারে। আর তুমিও আমার কাছে সেই বিষয়টা শিকার করেছিলে যে তোমার বাবা আসলেই ভালো মানুষ না । এই কথা বলে তুমি এটাও বলেছিলে যে , “যেমন ই হোক তবুও তো আমার বাবা”।আমাকে কেউ কখনও তোমায় নিয়ে কোনো কথা বলেনি , যে তুমি এরকম সেরকম , সবাই নিষেধ করেছে এটা বলে যে ওর বাবা ভালো নাহ, যদি পারো এখান থেকে বের হইয়ে আসো। আর সেই বের হইয়ে আসার কথা আমি যখন তোমায় বলেছি , যে দেখো এরকম বিষয় আমাদের কিন্তু এই বিষয় নিয়ে অনেক বড় সমস্যায় পড়তে হবে। কিন্তু তুমি বলেছো,আমায় ছেড়ে যাবেন না পায়ে ধরি। উনি তো আমার বাবা সব বুঝবে একসময়, আর আমিও তোমায় কষ্ট দেবোনা জন্য এটা ভাবছি যে উনিও তো বাবা এখন হয়তো না বুঝলে পরে বুঝবে। এটা ভেবে আর তোমার কষ্টের কথা ভেবে আমি বার বার বাধার সম্মুখীন হয়েও তোমার ছাড়তে পারিনাই। আর এই ছাড়তে না পারা ই যে তোমার জীবনের কাল হয়ে দাঁড়াবে এটা কখনও ভাবতেও পারিনাই। এটা ভাবলে তোমার যত কষ্টই হোক আমি তোমায় ছেড়ে দিতাম। তাইলে হয়তো আজকে তুমি অন্যকারো হয়ে থাকতে , কিন্তু তবুও তো দুনিয়া ছেড়ে চলে যেতে নাহ। কোথাও না কোথাও কোনোদিন হয়তো দেখা হতো, নয়তো বেঈমান হইয়ে তোমায় দেয়া সকল কষ্টের জন্য তিলে তিলে নিজেকে শেষ করতাম , কি আর করতাম ঠোট পুরাইতাম, পাগল হইতাম , তবুও তো তুমি দুনিয়ায় থাকতে। এভাবে আমায় একা করে চলে যেতে নাহ্।
অতপর, আমাদের এই ১ বছর ১ মাস ৪ দিনের কথার মাঝে , যখন মাঝখানে ৬ মাস হয় তখন তুমি আমায় জানালে যে ,তোমার বিয়ের কথা হচ্ছে তোমার বাবার কোন পাতানো ধর্ম আত্মীয় এর সাথে, তার বাসা কুমিল্লা। তখন তার বিষয়ে আরো জানলাম , তাদের নাকি অনেক সম্পত্তি। এত সম্পত্তি যে ওই ছেলেটা তাদের সম্পত্তির হিসাব ই জানে না।
যাইহোক, আমি তোমায় বললাম দেখো তুমি এই সমস্যার সমাধান পাবে শুধুই তোমার আম্মুর কাছে , তিনিই সব পারেন। আমি বললাম “তুমি আগেই আমাদের সম্পর্কের কথা না বলে, যদি বলো যে এখন বিয়ে করবে না, লেখাপড়া করবে আরো। যেহেতু তোমার আব্বু আম্মুর আর কোনো ছেলে মেয়ে নেই , তুমি কিছু করতে পারলে তাদের ভবিষ্যতে পাশে থাকতে পারবে । এসব বলার পরে তোমার আম্মু তোমায় মারধর করে , তিনি নাকি বুঝতে পারে তোমার কোনো জায়গায় সম্পর্ক আছে। এসব কিছু আমায় বললে তুমি, তখন আমি তোমার ওপর অনেক রাগ করেছিলাম এবং বলেছিলাম তরে দিয়ে কোনো কাজ ই হবে নাহ, তুই এত ভয় করিস সব বিষয়ে। আজ থেকে তোর সাথে কোনো কথা নেই । সব শেষ কর এখানেই। তারপর সেদিন এ একমাত্র প্রায় ১৬ ঘণ্টা কথা বন্ধ , ছিল সম্পূর্ণ একটা রাত আমি এত কান্না করি, আমার আম্মু আমার পাশে ছিল, আম্মু এটাও বলেছিল যে “দেখো বাবা আমি তোমায় নিষেধ করসিলাম কিন্তু তুমি শুনিনাই আমার কথা” , ছোট বাচ্চার মতো কান্না করেছিলাম সেই রাত্রে।
এভাবেই সকাল হলো, সকালেই তোমার মেসেজ আসলো , আমি আবার কথা বললাম , তুমি আমায় আবার বললে , তুমি তোমার আম্মুর সাথে কথা বলে সময় নিয়েছো। আর এই সময় ই যথেষ্ট ,এর মাঝে আমার কিছু করতে হবে আর যেভাবেই হোক তোমায় পাইতেই হবে। আমি সবকিছু মনোযোগ দিয়ে করতে থাকি , আমার দিন রাত এক করে কাজ শুরু করে দেই যে আমি কিছু একটা করবো তারাতারি। আমার একটি প্রতিভা ছিল সেটা হচ্ছে কম্পিউটার আর ইন্টারনেট এবং তথ্য প্রযুক্তি । তো আমি সেইটা নিয়েই এগাতে থাকি। এবং তোমার সাথেও আমার সম্পর্ক চলতেই থাকে।
চলতে চলতে আমরা তোমার পরীক্ষার কাছাকাছি চলে আসি। কুরবানীর ঈদ এর পরে তোমার পরীক্ষা , তোমায় আমি রুটিন করে দিলাম তুমি সেই অনুযায়ী পড়ো। আমি সবসময় তোমার ভালোটাই চেয়েছি, তোমার রেজাল্ট তাও ভালো চেয়েছিলাম। তাই তোমার লেখাপড়ার কোনো ক্ষতি না হয় তাই কথা বলা ও কমিয়ে দিয়েছিলাম। যেটুকু কথা বলতাম শাসন আর একটু ভালোবাসা দিয়ে বুঝাইতাম , ভালো রেজাল্ট করলে তোমায় বাড়িতে থেকে বিয়ের চাপ দিতে পারবে না। সে ও আমার কথা অনুযায়ী অনেক পড়াশোনা করে ।
হঠাৎ আবার খবর আসলো যে বড়লোক ছেলেটার সাথে এর আগে বিয়ের কথা হয়েছিল , ওই ছেলেটার সাথে আবার বিয়ের কথা হচ্ছে , ছেলেটা নাকি বিদেশ চলে যাবে তাই পরীক্ষার পরে তার সাথে বিয়ে দিয়ে দেবে। এটা নিয়ে অনেক চাপ তৈরি হয় । সে বলল এভাবে চাপ দিলে সে পরীক্ষা কিভাবে দেবে আর পাশ করবে কিভাবে। তারপরেও সে এভাবেই পরীক্ষা দেয় অনেক ভয় করে সে পরীক্ষা গুলো দিলো । তার পরীক্ষার মাঝেই তার মামাতো বোন দিবার বিয়ে হয়, এবং সেই বিয়েতে ওই ছেলেটা (সেই পাতানো ধর্ম আত্মীয়) আর তার পরিবার আসে। আর আমার প্রিয়তমা , আমাকে হারানোর ভয়ে সেই ছেলেটাকে সব বলে। সে বলে,”দেখেন আপনাকে বিয়ে করা আমার পক্ষে কোনোদিন সম্ভব না, আমি একজন কে ভালবাসি তাকে ছাড়া বিয়ে করতে পারব না”।
তখন ছেলেটা উত্তর দেয়, “আমি এই বিষয়ে কিছু বলতে পারব নাহ, তোমার আর বাপ মা যা করবে ঐটাই হবে” তখন আমার প্রিয়তমা , উনাকে অপমান করে অক্ষম থেকে চলে আসে , আর সেই ছেলেটা এই সবকিছু আমার প্রিয়তমার আম্মুকে বলে দিয়েছে, আর তখন থেকেই তার ওপর মানসিক নির্যাতনের শুরু করে দেয় সবাই মিলে।এসকল নির্যাতনের মধ্যেই সে তার পরীক্ষাগুলো দিচ্ছিল।তখন আমাকেও বলতে থাকে আমি এখন কি করব , তখন আমি তাকে আমার আব্বুর সাথে কথা বলায় দেই, আমার আব্বু তাকে বলে , “মা একটু ধর্য ধরো , তুমি একটু সময় দিলে তোমাদের দুজন কে আমি এক করে দেবো” তখন সে একটু শান্ত হয় এবং আমিও স্বস্তি পাই।
এরপর শুরুহয় দেশজুড়ে আন্দোলন , ইন্টারনেট বন্ধ যোগাযোগ বন্ধ, কথা বন্ধ, এভাবেই চলে গেলো অনেক দিন। কোনভাবে খোজ খবর নিয়ে চললাম ওই কয়দিন। তারপর ইন্টারনেট খুলে দেয়ার পর জানতে পারি , তার অজান্তেই তার বিয়ের ডেট করা হয় গেছে, তার বিয়ের বাজার ও করা হয়ে গেছে। আমাদের দুজনের ই ভয় ধরে গেছে , কি করবো কি না করবো কিছুই বুঝতে পারতেছিলাম নাহ। আমি আমার বাড়িতে জানাই , সে তার বাড়িতে জানায়। আমার পরিবার ও আমার প্রতি একটু রাগান্বিত হয়, এটাই স্বাভাবিক কারণ আমার সেই বয়স ও হয়নি আবার আমি কোনো কর্ম ও করিনা, যতই রাগ করুক তারপরেও সবাই বুঝল এবং বলল তাদের সাথে কথা বলে দেখব , তাদের হাতে পায়ে ধরে একটু সময় যদি তারা দিত।আমার পক্ষে এসব কথা আলোচনা হলো।
ইতি মধ্যে সে ও তার পরিবারের আমার বিষয় জানায় এবং বলে সে শুধু আমাকে চায়। এসব বলার কারণে সেদিন রাত ১ তার সময় তার বাবা এবং মা তাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয় এবং তখন সে আমায় ফোন করে বলে কি করবো আমি এখন। আমি বললাম তুমি তোমার নানীর বাসায় যাও, তার নিজ বাড়ি হইতে একটু দূরে। “”একটি বিষয় খেয়াল করবেন, কতটুকু মানুষত্যবোধ থাকলে প্রাপ্তবয়ষ্ক একটি মেয়েকে রাত ১ টার সময় কোনো বাবা মা বাড়ি থেকে বের করে গেট এ তালা দিতে পারে?””
যাইহোক, সেই রাতটুকু , তার নানীর বাসায় কাটিয়ে, সকালে তার খালার বাসায় চলে যায় বনপাড়া বাইপাস এ। সেখান থেকে আমায় বলে আপনি কি করবেন করে দেন। আমি বলেছি দেখো আমার সবাই একটু সময় চাইতেসে, সে ঐসব না বুঝে বলল “আপনি আমার আব্বুর সাথে কথা বলেন তাইলে তিনি সব বুঝবে”
আমি তার আব্বুর সাথেও কথা বললাম , তার বাবার কথা একটাই আমি সামনে গেলে আমায় এই করবে সেই করবে, আমি তাও হাত পা ধরে বললাম দেখেন আমায় একটু সময় দেন , আর আপনার মেয়েটাকে আমার কাছে দেন, কোনোদিন কোনো অভিযোগ করার সুযোগ দেবো না। তিনি কোনকিছুতেই রাজি হন না। এটা আমি আমার প্রিয়তমা কে জানালাম , সে বলল আমার আব্বু আম্মু কেউ যদি কথা বলে তাইলে হয়তো মানবে ।
তার কথা অনুযায়ী আমার আম্মু আবার তার বাবার সাথে কথা বলে পরিচয় দিয়ে বলে “ভাই দুইজন যেহেতু একথা সম্পর্ক করেছে তাইলে আমরা সবাই কথা বলে একটা সিধান্ত নেই, তখন তিনি বলেন, আমার মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে , আর কোনো কিছু সম্ভব না। তখন আমার বলে ঠিক আছে তাইলতে সেইটাই হবে। আর তিনি বলেন তার মেয়ে যদি আমার বাড়িতে আসে তাইলে বের করে দিতে, আর তিনি আমাকে বললেন আমি যেনো তার মেয়েকে কখনও কোনো যেনো কল না দি, অথবা কোনোভাবেই যোগাযোগ না করি । আমার কাছে যা কিছু আছে তার মেয়ের সব যেনো ডিলেট করি। আজ থেকে আমি সব ভুলে যাই।
আমার কাছে আর কোনো পথ ছিল নাহ , কোনোভাবেই কিছু করতে না পেরে তোমার থেকে আমাকে দূরে চলে আসতে হলো। বাবা মা থেকে লুকিয়ে কতই কান্না করলাম। বিকেলে, মন খারাপ জন্য আমার কাছের বন্ধু আমায় নিয়ে ঘুরতে বের হলো, দুইজন ঘুরতে ঘুরতে অনেক দুর চলে গেছি । একটু পরে আমায় তুমি ফোন দিয়ে বললে আমি আপনার বাড়িতে আসতেছি । আমি বললাম তুমি এটা করিও নাহ, এভাবে আসলে অনেক বড় সমস্যা হইয়ে যাবে। সে আমার কোনো কথা না মেনে আমার বাড়িতে চলে আসে , সে আসার কিছুক্ষণ পর তার বাবা , বড় বাবা এবং তার এলাকার অনেকই আসে , আমাদের এলাকার মেম্বর , এবং আরো অনেক গুণীজন , এলাকার এবং আসে পাশের এলাকার অনেকই অবস্থিত থেকে একটা সমঝোতার ব্যবস্থা করা হয়।
সেখানে আমাকে জিজ্ঞেস করা হলো আমার কি তোমার সাথে কোনো সম্পর্ক আছে নাকি, আমি বলেছি হ্যা আমি তাকে ভালবাসি এবং সম্পর্ক ছিল , কিন্তু সে এখন আমার বাড়িতে যেভাবে আসছে এভাবে আমি মানব না, আমারও একটা সামাজিক মর্যাদা ও মূল্যবোধ আছে। এটা আমি বলেছি আমার মনের রাগে, কারণ সে আমার কথা অমান্য করে এভাবে আসলো। তার মানে এই না যে তরে ভালবাসি না। সেই মিটিং এ আমার নানা সরাসরি বলেছিল যা ঘটার ঘটেছে কিন্তু দুইটা জীবন নষ্ট হতে দেবো না , ১ সপ্তাহ এর মধ্যে বিয়ে দিয়ে দেবো। আর সেখানে আর একটি কথা উঠে সেটি তোমার বয়স। তোমার বয়স কম জন্য সরাসরি কেউ সেদিন তোমার আমার বিয়ে দেয়নি। তোমাকে তোমার বাবা, তোমার বড়বাবা, তোমাদের এলাকার বাকি সবাই এর উপস্থিতি তে তোমার বড়বাবার হাতে তোমাকে তুলে দিলে যে কালকে তোমার বড় বাবার বাড়িতে বসে আলোচলা করে বিয়ে দেয়া হোক আর যেটাই হোক করা হবে। এভাবেই আমার বাড়ি হতে নিজ দায়িত্বে নিয়ে গেছে তোমার বাবা এবং বড় বাবা।
পরের দিন তার বাড়িতে আমাদের একজন আত্মীয় এবং তিনি তাদের ও আত্মীয়, তার মাধ্যমে বিয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়। সেখানে আমাদের সবাই আলোচনা করে তাকে এই বলে পাঠানো হয় যে , তোমার বাবার কাছে উপস্থাপন করবে যে তোমাকে বিয়ের পর ৩ বছর সময় তোমার বাবা দায়িত্বের সহিত রাখবে , এবং ৩ বছরে তোমাকে ৩ তো গহনা দেবে। আসলে এই কথাটা বলার কারণ ছিল যেনো তোমার বাবা যেনো বলে যে আসলে আমি এসব তো দিতে পারবোনা , হয়তো বিয়ের পর সময় লাগলে কিছু সময় দিতে পারব। আমরা সবাই এই কথাটাই আশা করেছিলাম।কারণ আসলেই আমাদের একটু সময় দরকার ছিল , আমার বাবা একজন দিনমজুর, আমি যদি তাকে ঐভাবে বিয়ে করে নিয়ে যাই আমার পরিবার চলতে পারবে নাহ। আমার তো আর এক টাকাও ইনকাম নাই।
আমার তো লেখাপড়া শেষ এর দিক আর দুইটা বছর পর শেষ হবে , আর এর মাঝেই একটা কাজের ব্যবস্থা ও করা যেতো। হয়তো তারা আমার ভাষা তাই বুঝে উঠেনাই। কখনও বলিনাই তোমায় নিবনা বা তেমন কিছু, আসলে আমরা সবকিছু একটা ভালো সমাধান চেয়েছি, তোমার বাবা হয়তো অনেক টাকাওয়ালা কাউরে পেয়েছিলে , সে হয়তো তোমায় অনেক বেশি সুখী রাখতো, কিন্তু আমি তো জানি তুমি শুধু আমায় চেয়েছিলে , তুমি আমার সাথে জীবন কাটাতে চেয়েছিলে , আর তোমার এই চাওয়া আমি বুঝে তোমার জন্য কিছুই করতে পারলাম নাহ। জন্যই হয়তো আমায় এত বড় শাস্তি দিয়ে গেলে। 😅
কিন্তু তোমার বাবা সেই অবস্থায় সবার সামনে তোমায় লাথি মেরে উঠায় নিয়ে যায় , এবং বলে ৩ দিনের ভেতর তোমার বিয়ে দেবে। আর আমায় দেখে নেবে , আরো অনেক কথা আমার মামলা দেবে , এই সেই । আর তুমিও তোমার বাবার সাথেই চলে গেছিলে সেদিন, তুমি আসার সময় নিজের ইচ্ছায় আসলে আমার বাড়িতে , কিন্তু আমার বাড়িতেও তুমি বলেনি যে আমি এখন থেকে যাবনা, তোমার বড় বাবার বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়ার সময় ও তুমি একটিবার ও বলেনি যে আমি যাবনা। তোমায় ডাকা সাথে সাথে উঠে চলে গেলে।
আমি এমনিতেই তোমার কর্মের জন্য তোমার ওপর রাগান্বিত, তারপরে তুমিও সবজায়গায় স্বইচ্ছায় আসলে আবার চলেও গেলে। এতে আমার মন সবদিক থেকেই ভেঙে গেলো। জানিনা কেনো তবে ছোটবেলা হতেই আমার অনেক রাগ , আগে রাগ হলে ভাংচুর করতাম। তোমার ওপর রাগ হওয়ার পরে আমি তোমার কথা ই ভাবলাম , আমি কি তোমায় ভুল চিনেছিলাম , তুমি কেনো আমার সাথে এমন করলে? আরো অনেক কিছু আমার মাথায় আসতে থাকে ।
একটা বিষয় কি জানো, জারে যত বেশি ভালোবাসা যায়, রাগ হইলে তার ওপর ততবেশি অভিমান ও হয়। অভিমানটি আসলে কেমন আমি তোমায় ভুলতে চাই, আর সারা রাত তোমার জন্য কান্না করি, এটাই আমার রাগ। এখন থেকে নিয়ে যাওয়ার পর যদি বিয়ে করে নিতে তাইলে হয়তো রাগ হতো, কিন্তু তুমি তো থাকতে আমার মনে, আর এই দুনিয়ায়। আমি কি এই অভিমানের জন্য তোমায় হারাইলাম । ভালোবাসলে অভিমান হবে কথা বন্ধ হবে কত কিছুই হবে , তাই বলে আমায় এমন ভাবে একা করে চলে যাবে ভাবতেও পারিনাই কখনও। আমি তোমায় কোনো দোষ ই দিব না , আমার কোনো ভুলের জন্য তুমি আমায় সারাজীবনের জন্য শাস্তি দিয়ে গেলে তো।
যাইহোক, অনেক দিন কথা হইলনা তোমার সাথে , প্রায় ১০ দিন পর তুমি তোমার বান্ধবীর নম্বর থেকে আমায় ফোন দিলে আবার ম্যাসেজ দিলে , তুমি এখন থেকে গিয়ে খুব অসুস্থ ছিলে, এসব বললে । আমি সব কিছুই শুনলাম । তোমার ওপর আমার অভিমান তখন ও আছে , তাইবলে আমি কিন্তু তোমায় খারাপ কোনো কথা বা তোমায় একটুও অসম্মান করে কোনো কথা বলিনাই। অভিমানে বলেছিলাম তুমি আগে নিজের ভুলগুলো বুঝে নিজেকে ঠিক করো তারপর কথা হবে। তারপর তোমার সাথে আবার কথা বন্ধ।
এর মাঝে তুমি , ওই ছেলের সাথে কথা বলেছো, ওই ছেলেকে দিয়ে কথা বলিয়েছো। বুঝাইতে চাইছো তোমার ভুল হয়েছে , সেই ছেলে আমাকে অনেক বার ফোন দিয়ে বলছে তোমার সাথে কথা বলার জন্য। শেষমেষ আমার রাগ হয় এবং আমি ওই ছেলেকে রাগের মাথায় অনেক কথা শোনাই, বলেছিলাম ভাই সমস্যা তো সব তোর জন্য , তুই সব কিছুর জন্য দায়ী , আবার তুই ই বার বার ফোন দিয়ে ঝামেলা করতেছিস, সেই ছেলেটা আমায় তার বাবার টাকার গরম ও দেখাইলো, বলল “আমার বাবার এত টাকা যে আমি নিজেও জানিনা।” আমি বললাম এজন্যই এতো সমস্যা তাইলে তোর এত টাকা তুই বিয়েটা করে নে ভাই, আমায় বার বার ফোন কেনো দিশ, ভালোবাসা কি মিটিং করে হয় নাকি।
তোমার আমার মাঝের সমস্যা ,আমি আর তুমি ই সমাধান করতে পারবো, যার জন্য সমস্যা সে কি কখনও সমাধান দিতে পারবে? সে আবার ও ফোন দেয়, আমায় বলে তোমার যত খরচ, লেখাপড়া , জামাকাপড় ,আর বিভিন্ন সব নাকি তারা এ বহন করে। তাইলে এসব বলে সে কি তোমার আমার ভালো করতে এসেছিলো? আমি বলেছিলাম “ভাই এসব তো আমি জানতাম না, তাইলে এত কিছু সে ও আমাকে জানায় নি, এসব জানলে কি আমি তার সাথে এত বড় সম্পর্কে থাকতাম।” সে এসব ও বলে আমাকে জ্বালায় দেয় আবার বলে তোমার খোজ নেওয়ার জন্য । আমি নেয়নি 😅। এসবের মানে তো বুঝাই যায় রে কে কি চায়। আমি জানতাম তুমি হয়তো ভুলগুলো বুঝতেছো আসলেই যা যা ঘটেছে সেগুলায় তোমার আর আমার কি কি ভুল ছিল সেগুলো তোমার মাথায় আসতেছে।
কথায় আছে , কষ্টে রাখলে নাকি মানুষ তার ভুলগুলো একটু হলেও বুঝতে পারে। আমিও এটাই চাইছিলাম আমার কাছে শিকার করো নিজে যে আমার ভুল ছিল এখানে। তারপর ১ মাস পর হলো, তোমার জন্য আমি কষ্ট পাইছি কি পাইনি এটা আমি আর আমার আল্লাহ্ জানে , আর এখন তুমিও জানো। ১ মাস পরে তুমি আমায় আবার কল দিলে , আমি তোমার সাথে কথা বলার জন্য ফোন মিনিট কিনলাম, ভাবলাম আজ মন খুলে তুমি সব বলবে , এতদিনে তুমি কি কি বুঝেছো। কিন্তু তোমার সাথে কথা বলতে গিয়ে আমি দেখলাম তোমার মাঝে সকল দোষ আমার । তাই আমি ই বললাম সব যেহেতু আমার জন্য ঘটেছে তাইলে তুমি আমায় দূরে রেখো , তুমি নিজে ভালো থাকো, তুমি সেটাও করবে না। আবার তোমার সাথে রাগারাগি ই হলো। আর কথা বন্ধ হলো।
প্রায় ২ মাস এর কাছাকাছি, তোমার সাথে আমার কথা শুরু হলো আমার জন্মদিনের উইশ করলে সেদিন হতে। তারপর তুমি সব শিকার করেছিলে যে কোথায় কোথায় ভুল ছিল। তখন তোমার সাথে আমার কথা হতো , কিন্তু আগের মত না , আগের মত সেরকম কোনো মায়া মমতা দিয়ে কথা বলতাম না , তুমি বলতে কারণ তুমি সব বুঝতে পেরেছিলে। আমিও জানতাম সেটা। আমি তোমায় ঠিক ই মনে মনে ভালোবাসছি কিন্তু তোমায় কথায় বুঝতে দেইনি। আমি চাইছি তুমি একটু বুঝতে শিখো সবকিছু।এরকম ই কথা হতো কম কম । তুমি অনেক খেয়াল রেখে কথা বলতে আমি সেরকম বলতাম নাহ।
এরই মাঝে আমার জরুরি একটা কাজ এ ঢাকা যাইতে হয়, তোমার সাথে কথা বলেই যাই। তুমি সেই প্রথম থেকেই আমাকে কোথাও যেতে দিতে চাইতে নাহ , বাইরে না , কোথাও নাহ। কিন্তু আমিও তোমার কথা শুনতাম নাহ, তোমায় জ্বালাতে ঐটাই করতাম আগে। তোমার সাথে কথা বলতে বলতেই গেলাম , আমি কোথাও গেলে সানগ্লাস পরে পিওযায় , ছবি তোমায় দেয়ার পর তুমি সেদিন ও বললে আমি যেনো সানগ্লাস পরা ছেড়ে দেই। আমায় দেখে নাকি অন্য মেয়েরা পাগল হইয়ে যাবে। বরাবরই তুমি আমার পাশে কাউরে সহ্য করতে পারনাই, এমন কি আমার ছোট ছোট মামাতো বন দের ও না , বলতে তোমার কম্পিটিশন। যদিও মজা করে বলতে , তাও আমার ভালো লাগতো। বুঝতাম সত্যিই অনেক ভালোবাসো।
তারপর ঢাকায় গেলাম , তোমায় বললাম খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পরো আমার যাইতে রাত হবে । তুমিও সেটাই করলে। তারপর আমি আমার বন্ধুর সাথে দেখা করলাম। সে তোমার বিষয়ে জানতে চাইলো , আমি বললাম কিজানি তার বিষয়ে কিছু জানিনা তো। এটা বলতেই সে আমায় বলল, তুই ওর ভুলে যা , ও এখন ভালই আছে । আমি বললাম কেনো কি হয়েছে কিছু হয়েছে নাকি? সে বলতে চাইলো নাহ।
তো আমি জোর করলে , সব বলে দিলো। সে প্রেম করতেছে , আমার শ্রাবণী জারে আমি এত বিশ্বাস করেছি , সে প্রেম করেছে , এমনকি সেই ছেলেটার সাথে বিয়ের কথা পর্যন্ত হইয়ে গেছে । ভাবা যায় বলো , আমি অভিমান করেছি কিন্তু আমি কারোর কাছে বুঝতে দেইনি, বা কারোর কাছে যায়নি। হ্যা আমার রাগ হয়েছিল , কিন্তু আমি অন্য কাউকে অপশন বানাই নি তো। আমি তোমায় বিশ্বাস করে তোমার আশায় বসে ছিলাম আর তুমি অন্য কারো হইয়ে গেলে। আরো শুনতে গিয়ে শুনলাম তুমি শুধু কথা ই বলনি অনেকবার দেখা করেছো তার সাথে । সে তোমার স্পর্শ ও করেছে। 😅
এসব শুনে আমার মনটা ভেঙে গেলো একদম, শুধু ভাবছি বাড়িতে যাবো কখন, মনে হচ্ছিলো আমার দুনিয়া পুরোটা অন্ধকার হইয়ে গেছে। আমি মাটির মধ্যে ঢুকে গেছি। এমন অনুভূতি কাউকে হয়তো বলে বোঝানো যাবেনা। ভালোবাসি তো অনেক তাই হয়তো খারাপ বেশি ই লাগলো। বিষয় না আমার যত কষ্টই হোক আমি তোমায় ভালোবাসা দেয়া কমায়নি। আমার ইচ্ছা ছিল ঢাকা থেকে এসে পরের দিন আমি তোমার সাথে দেখা করবো। ভাগ্যের কি পরিহাস দেখো, আমি এর আগে সকল কিছু, তোমার যেকোনো ভুল ত্রুটি তোমার কাছে গিয়ে বসে তোমায় বুঝিয়েছি যে দেখো এটা ভুল। কিন্তু সেদিন আমার কি যে মনে হলো, আমার আর মন ই চাইলো না যে তোমার সামনে যায় বা তোমার সাথে দেখা করি। নিজের মাঝেই কেমন যেন হচ্ছিল যা আমি কাউরে বলে বুঝাতে পারিনাই। সেদিন তোমার সাথে দেখা না করা টাই হয়তো আমার জীবনের বড় ভুল ছিল, যার ফলেই মনেহয় তোমায় হারাইলাম। কখনও ভাবতেও পারিনি তুমি এমন করবে আমার সাথে।
তুমি সকালে আসলে বনপাড়া কম্পিউটার ক্লাস করতে, আমি বললাম এসে আমায় ফোন করিও , তোমার সাথে আমার অনেক কথা আছে। তুমি এসে আমাকে ফোন দিলে মেসেঞ্জার এ, তোমায় আমি জিজ্ঞেস করলাম ,খাইছো সকালে , এমন সাধারণ কথা দিয়ে শুরু করলাম। জিজ্ঞেস করলাম তোমার জীবনে কি এমন কিছু আছে যা আমি জানিনা। তুমি বললে আমার জীবনে যা কিছু আছে সব কিছু তুমি জানো । আমি বললাম হয়তো অনেক কিছু আছে যা হয়ত আমি জানিনা।
তুমি কিছুই শিকার করলে না, আমি তখন তোমায় একটা গল্প বললাম , যে গল্প টা তোমার নতুন প্রেম এর গল্পের একটি নমুনা মাত্র । সব শুনলে কিন্তু তাও তুমি শিকার করলে নাহ। তখন আমি তোমায় অনেক জোর করলাম যে গল্প শুনে কি কিছু মনে পড়ছে তোমার? তুমি তাও কোনো ভাবেই শিকার করলে না কোনকিছু । তুমি বললে আমি জানি তাইলে আমার মুখ থেকেই শুনবে । আমি তাও তোমায় জোর করলাম যে যা যা আছে সব বলে দাও এখনো সময় আছে আমি তোমায় কিছু বলবো না। তাও তুমি মুখ খুললে না । তারপর আমিই তোমায় বললাম সব , যে আমার সাথে সম্পর্কে থাকা অবথায় তোমার কলেজ এর পিঠা উৎসব এর দিনে তোমায় একটা ছেলে প্রপোজ করেছিল সাথে একটি চকলেট ও দিয়েছিল ,কিন্তু সেদিন তুমি তার কথার উত্তর দেউনি, তাকে বলছো তোমার হাজব্যান্ড আছে 😊।
তারপর আর কোনোদিন সেই ছেলের সাথে তোমার দেখা আর কথা হয়নি । কিন্তু তুমি কিভাবে তার সাথে প্রেম এ জড়ালে, আবার কথা বলছো ঠিক ছিল , ওই ছেলেটা তোমায় স্পর্শ ও করেছে, আবার তোমার সাথে তার বিয়ের কথা পর্যন্ত হইয়ে গেছে। আর এইদিকে তুমি আমায় এক একেক জন দিয়ে ফোন দিয়ে তোমার সাথে কথা বলার চেষ্টা করতেছ, আবার নিজে ফোন দিয়ে মাফ চাইতেছো । কিন্তু একই সাথে আর আরেকজন ছেলের সাথে সম্পর্কে গেছো , স্পর্শের অধিকার দিয়ে দিছো ।
তারপর আর কোনোদিন সেই ছেলের সাথে তোমার দেখা আর কথা হয়নি । কিন্তু তুমি কিভাবে তার সাথে প্রেম এ জড়ালে, আবার কথা বলছো ঠিক ছিল , ওই ছেলেটা তোমায় স্পর্শ ও করেছে, আবার তোমার সাথে তার বিয়ের কথা পর্যন্ত হইয়ে গেছে। আর এইদিকে তুমি আমায় এক একেক জন দিয়ে ফোন দিয়ে তোমার সাথে কথা বলার চেষ্টা করতেছ, আবার নিজে ফোন দিয়ে মাফ চাইতেছো । কিন্তু একই সাথে আর আরেকজন ছেলের সাথে সম্পর্কে গেছো , স্পর্শের অধিকার দিয়ে দিছো ।
তুমি তখন একের পর এক সব শিকার করে নিলে , আর তোমার কথার কন্ঠস্বর চেঞ্জ হইয়ে গেলো, যা আমার খুবই অপরিচিত। এমন তুমি আমি কখনোই চিনতাম নাহ। কেমন যেনো একটা রাগান্বিত স্বরে বললে, তুমি ৭ টা দিন অসুস্থ ছিলে তোমার কোনো খোজ নেয়নি আমি। এটাই আমার ভুল তাই তুমি নতুন কাউরে আপন করেছো। আমি বললাম তাইলে সব ঠিকই আছে ,তুমি কেনো আবার আমার কাছে ফিরে আসার বা আমার সাথে কথা বলার কি দরকার বলো । তখন তুমি বললে তুমি নাকি আমাকে চাও।
তখন আরো শিকার করলে , তুমি যখন অসুস্থ ছিলে তোমার বান্ধবী মোছা: বিনতু খাতুন (বিনু) , ঠিকানা: মাঝগাও, বড়াইগ্রাম, নাটোর। সে নাকি তোমার কাছে গেছিল, তোমায় দেখতে । আর যাওয়ার পরে সে তোমাকে নানান ধরনের কথা বলে আর তোমায় ফুসলানো শুরু করে। সে নাকি তোমায় বলে , যে এই সকল ধোঁয়াশা কাটাতে তোমার নতুন কারো কাছে যাওয়া দরকার , কারো স্পর্শ পেলে সব ঠিক হইয়ে যাবে তোমার। আর তুমি তখন তার কথায় শোনো , সেই অনুযায়ী কাজ করো। সে ই তোমায় সেই ছেলের নম্বর দেয়, এবং যোগাযোগ করে দেয়। কথা বলা শুরু হয় এবং , সে ই তোমার আর সেই ছেলের দেখা করার ব্যবস্থা করে। আর তুমি সেই ছেলের সাথে দেখা করো।
(আমি যে এই কথা গুলো লিখতেছি তার মানে এই না যে আমি তোমার বান্ধবী কে ফাঁসিয়ে দিচ্ছি বা তেমন কিছু, আসলে তুমি একটা মানুষ তুমি নিজে মন না দিলে আর তোমার সীমানায় কাউরে প্রবেশ করার অধিকার পাবে নাহ) তুমি তার কথা মত সব কাজ করলে মন দিয়ে দিলে , আবার আমার কাছে তাইলে কেনো আসলে বা আসতে চাইতেছ। তোমার একটাই কথা তুমি নাকি আমাকে চাও।
সক্ষম কিছু যখন সামনে চলে আসলো , তখন তুমি নানান রকম কাহিনী শুরু করলে , তুমি এই করবে ওই করবে , এই খাবে ওই খাবে , আর নানান কথা। আমি বুঝলাম তুমি আবার কাহিনী শুরু করতেছ। তখন আমি তোমায় জিজ্ঞেস করলাম আচ্ছা সব বাদ দাও, তুমি এখন বলো কি চাও , আমাকে চাও নাকি তাকে। তুমি বললে তুমি আমাকে চাও। আরো অনেক কিছু, আমি নাকি কুয়াশার মত , যতবার ধরতে এসেছো আমি বাতাস এ মিশে গেছি। আসলে তুমি তো আমাকে চিনতে পারলে না রে, আমার ভালোবাসা কেমন জানলেই না তুমি। আমার যদি জানতে আর আমার কথা মানতে তাইলে হয়তো তোমার জীবনে এরকম দিন আসত নাহ।
তোমার আমার এই সম্পর্কে আমি সবসময় তোমায় বলেছি , দেখো মানুষের সাথে চলবে মিশবে সব করবে , কিন্তু কাউরে কখনও তোমার ভেতরে ঢুকতে দিওনা। কিন্তু আজ দেখো তুমি সেটাই করে বসলে, আর সেই সুযোগে তোমার ভালো করতে এসে তোমার কাছের মানুষ আরো খারাপ করে দিল তুমি বুঝে উঠার আগেই। সবসময় তোমায় এটাই সতর্ক করেছি , কিন্তু দেখো এটাই করলে তো।
সেদিন তোমার পাগলামি আর্টেই থাকে , তুমি তোমার ঐ বান্ধবীর সামনেই আমার সাথে কথা বলা অবস্থায় ৩ টা ঘুমের ঔষধ খেলে, আমি তোমায় হাত পা ধরলাম যে এমন টা কেনো করতেছ। তোমার বান্ধবী তোমার সাথেই ছিল , সে সব দেখতেছে তুমি খাইলে সে বাধা ও দিল নাহ, আমি তো ফোন এ সব শুনতেই পাচ্ছিলাম। খবর পড়ে সে বলতেসে এসব খাস না। আমি এত হাত পা ধরলাম যে আচ্ছা একটা ভুল করে ফেলছো, আমি তো আছি নাকি , তো আমার সাথে এমন কেনো করতেছ।
আবার জিজ্ঞেস করলাম , আচ্ছা তুমি কি চাও। তুমি আবার ও বললে , তুমি আমাকে চাও। আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম নাহ , তোমার সাথে কথা বলতে বলতেই কেঁদে ফেলেছি। মনে একটু রাগ ও হইয়ে গেছে , তোমায় বললাম , তুমি এটা কিভাবে করতে পারলে বলো, জেও তুমি আমার পাশে একটা ছোট মানুষ কেউ সহ্য করতে পারো না, আমি কিভাবে তোমার মনের মাঝে আরেকজন কে সহ্য করি, কিভাবে কেউ তোমারে স্পর্শ করা সহ্য করি। এভাবে আমার বিশ্বাস না ভাঙ্গলেও পারতে, আমি তো তোমায় বলেছিলাম যে কখনও যদি আমি বাদে কারোর সাথে চলে যেতে হয় আমায় বলবে আমি নিজে হাতে তুলে দেবো, যত যা করা লাগে আমি করবো।
তুমি বললে যে , “আমি কিছু বুঝে উঠার আগেই আমার বান্ধবীর ফুষলানো তে এইসব করে ফেলেছি”। রাগ করে বললাম , “তুমি তো কিছুই বুঝো না , তোমার বান্ধবী যেমন **** তোমাকেও তেমন ই বানাতে চায়। দেখো তোমার বান্ধবীর তো **** এর অভাব নাই, তুমি নিজেই বলতে একসময় আমার কাছে।”
সেদিন তোমার বান্ধবীর সাথেও কথা বললাম তোমার ফোন থেকেই, তরে জিগাইলাম , ভাইয়া তুমি কিভাবে পারলে এরকম টা করতে। শুধুমাত্র সে অসুস্থ ছিল আর আমি তাকে দেখতে যাইনাই জন্য এত বড় শাস্তি দিলা। সে অসুস্থ আমি যে তার খোজ নিচ্ছি কি নেয়নি সেইটা শুধু আমি ই জানি , হ্যা আমার অভিমান ছিল তাই সরাসরি ওর সাথে কথা বলিনাই, তার মানে এই না যে আমি ওর ভালবাসি নাই। তোমার বান্ধবী আমায় বিদ্রুপ ভাবে বলল “তুই তো ফেরেশতা” 😅 এই বলে তোমায় ফোন দিলো। আমার আর কিছু বলার ভাষা নেই। তোমার একটাই কথা আমি তোমায় দেখব ভিডিও কল দাও, আমার রাগ আমি কল ধরলাম নাহ। তোমার বার বার একটাই কথা আমি আপনাকে চাই।আমি চোখের পানি মুছে, আমি বললাম , যা আবার তোরে মাফ করে দিলাম । তোরে কি আমি মাফ না করে থাকতে পারবো রে , তুই তো আরেকটা আমি ই। মানুষ মাত্রই ভুল করে , তুইও ভুল করেছিস। আমি সব মেনে নিলাম আর তোরে মাফ করে দিলাম।
তুমি সেই আবারো আমায় বিশ্বাস করেতেই পারলে নাহ। ভাইরে ভালোবাসার মানুষ যত ভুল ই করুক তরে ক্ষমা করতে আমি পারি, কিন্তু মনে কষ্ট হয় অভিমান হয় , তাই রাগ করে একটু দূরে থাকা মানে ভালোবাসার মানুষটাকে সুযোগ দেওয়া ,ভুল টা বুঝতে দেওয়ার জন্য। যেনো সে বুঝে এবং আবার ভুল না করে বসে।
কিন্তু তুমি কি করলে , তুমি আমার দুর্বলতার সুযোগ নিলে । আমি যতই বলতেছি যে আমি সব মেনে নিয়েছি , আমি তোমারই থাকবো, আমাদের সম্পর্ক আগের মতই থাকবে। তোমার পাগলামি ততই বাড়তে থাকলো। আমি রেগে গেলাম , ভাই ভুল করলে তুমি , আমি সব মেনে নিলাম তাও কেনো তুমি আমার সাথে এমন করছ যে , এই করবো ওই করবো , জীবন রাখবনা। ভালোবাসি খুব বেশি এই দুর্বলতার জন্য আমার সাথে মন করছ। আমি তোমার হাত পা ধরে বললাম, তোমার মুখে বলো তুমি ঘুমের ঔষধ খাইছো, নইলে লেবুর রস করে খাও, কিছু একটা করো, আমার সাথে এমনটা শুরু করলে তো মি শেষ হইয়ে যাবো। তুমি আমাকে চাও , আর সেই চাওয়া পাওয়ার জন্য কি তুমি আমকে শেষ করে দেবে বল।
তখন তুমি একটু থামলে , তাও বার বার বলতেছো,” আমি অপবিত্র, আমাকে অন্য পুরুষ স্পর্শ করেছে”। আমি বললাম শোনো , “আমি কি শুধু তোমার তোমার শরীরকে ভালোবেসেছি?” তুমি বললে নাহ। আমি তো তোমার মন কে ভালবাসি, তোমার মনের মাঝে যদি কেউ থাকে সেইটা বলো আমি আর থাকবনা। তুমি বললে কেউ নেই আমি ছাড়া। আমি বললাম তাইলে আর এত পাগলামি কইরো না আমার সাথে। আমি তো তোমায় আগেও বলেছি, তোমার যদি ২-৪ বার বিয়েও হয় সমস্যা নাই, তারপরেও আমার কাছে আসতে চাইলে তোমায় নিয়ে আসবো আমি। আমার একটাই সমস্যা সেটা হচ্ছে আসলেই আমার কোনো কর্ম নেই আর আমার পরিবারের অবস্থা আসলেই ভালো নাহ তাই এখন আমি বিয়ে করতে পারছি না বা বাড়িতেও জোর করতে পারছি নাহ। তুমি যদি এসব বুঝো তাইলে আমার সাথে পাগলামি করিও না আর।
তুমি অনেকক্ষণ পর , একটু বুঝতে পারো, কিন্তু ৫ মিনিট পর পর আবার পাগলামি শুরু করো। আমি তোমায় বুঝাইতে বুঝাইতে নিজেই পাগল হইয়ে যাচ্ছিলাম। তুমি বনপাড়া থেকে যাওয়ার সময় তোমার বান্ধবীর সাথে গল্প করেছো আমায় ফোন এ রেখেই আমার মনেই আছে যে তুমি বাড়ির চারিদিকের ঘাস পরিষ্কার করার কথা বলে ঘাস মারা বিষ কিনেছো। তুমি ওকে এটাও বলেছো যে এটা খাইলে নাকি মানুষ বাঁচে না। সব তুমি আমায় শুনিয়ে শুনিয়ে তোমার বান্ধবীকে বলেছো, আমি সব বুঝি। তোমায় বললাম আচ্ছা এসব বলে আমায় কি বুঝাইতে চাও, আমি তো তোমার সব কিছু মেনে নিলাম। তুমি বললে আরে মা আমায় কিনে নিয়ে যাইতে বলছে। আমি তাই মানলাম।
তারপরে, বাড়িতে গিয়ে কথার মাঝে একটু পর পর তুমি পাগলামি করো। তুমি জিলাপির সাথে ওই বিশ মাখায় আমাকে ছবি তুলে দাও, শুধু আমাকে ভয় দেখাও। এসব দেখতে দেখতে বিরক্ত হইয়ে গেলাম। তোমায় ইচ্ছামত বকা দিলাম,দিয়ে আবার বুঝাইলাম ।
এত এত বুঝানোর পরে , তুমি একটু শান্ত হইলে সন্ধ্যার পরে রাত হলো , তুমি অনেকতাই শান্ত । তুমি বললে ঘুমের ঔষধ, আর বিষের বোতল কথায় ফেলে দেবো, আমি অনেকটা শান্তি পেলাম শুনে , যে তুমি পাগলামি ছেড়ে দিছো। আমি বললাম বাইরে কোথাও ফেলে দিয়ে আসো। তুমি বললে এখন মা আছে , আমি বাইরে গেলে আমি ফেলে দিচ্ছি। আমি বললাম চলো খবর খেয়ে ঘুমাই, আগের রাতে ঢাকা থেকে আসতে আমার একটুও ঘুম হয়নি, আবার তোমায় নিয়ে ভেবেছি , আজকে একটু শরীর খারাপ লাগতেছে তারাতারি ঘুমাই। খাওয়াদাওয়া শেষ এ মজা করে কথা বললাম , আমি বললাম তোমায় কিন্তু আজ থেকে ওই ছেলের নাম ধরে খ্যাপাবো। তুমি বললে খালি বইলো আমিও তোমায় খ্যাপাবো। এমন কথা শুনে সব স্বাভাবিক মনে হইলো, তোমায় জিগাইলাম তুমি কি স্বাভাবিক হইছো, হইলে চলো ঘুমাই।
ঘুমাতে গিয়ে আবার , একটু পাগলামি করলে, বকা দিয়ে দিয়ে ঘুমাতে বললাম। অনেক কথা বলে ঘুমিয়ে গেলে আমিও ঘুমাইলাম। পরের দিন ঘুম থেকে উঠতে আমার দেরি হয় অনেক। কিন্তু ঘুম থেকে উঠে আমি যা দেখি তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম নাহ্। গতকাল সারাদিন তোমার সাথে আমার কত কথা রাতেও কথা , তোমায় কত বুঝ দিলাম কত কিছু, তুমি বুঝলে , দুইজন মজা ও করলাম । কিন্তু ঘুম থেকে উঠে দেখি তুমি আমায় ৩ পেজ এর একটি চিঠির লিখে ছবি তুলে দিয়েছো , সেখানে লেখা আছে তোমার মৃত্যুর জন্য আমি দায়ী নই, আরো অনেক কিছু লিখেছো যা তোমার আমার জীবনে হয়েছে। এসব দিছো, আবার তোমার আঙ্গুলে ওই বিশ একটু মাখায় নিয়ে উখে দিছো এসব ভিডিও দিছো। আরো অনেক কিছু ম্যাসেজ এ লিখে রাখছো। আমি কি তোমায় এসবের জন্য এত বুঝাইলাম সারাদিন রাতভর।
ঘুম থেকে উঠে এসবকিছু দেখে আমার হাত পা কাপতেছে , মাথা ঘুরাচ্ছে, বুঝে উঠতে পারতেছি না কি করবো না করবো। আমি তোমার ফোনে ফোন করলে দেখি তোমার ফোন বন্ধ দেখায় তখন আমার আরো ভয় ধরে যায়, আমি এখন কি করব। সত্যিই কি তুমি খাইছো নাকি। আমি কি তোমাদের ঐখানে যাবো, না কি করবো বুঝে উঠতে পারতেছিলাম নাহ। আমি ছিলাম নানীর বাড়িতে, মামাকে দেখে তুলে বললাম এরকম বেপার , সে ও বুঝে উঠতে পারলো না কি করবে না করবে। আমি বললাম মামা তুমি আমায় মায়ের কাছে নামায় দিয়ে আসো একটু। বাড়িতে গিয়ে মায়ের কাছে সব খুলে বললাম মা বললো, কোনভাবে যোগাযোগ করতে, আমি কতবার কল দিলাম তোমার মোবাইল বন্ধ , ততই আমার ভয় বেড়ে যাচ্ছে। আমার আম্মু তখন বলল , “নাকি আমি গিয়ে ওর খালার বাড়ি জানাবো যে এরকম কিছু করে ফোন বন্ধ করেছে , একটু খোজ নিয়ে দেখেন”।
তোমার খালার বাড়ি আমাদের গ্রামের শেষ মাথায়, আমার আম্মু বাড়ি থেকে বের হইয়ে কিছুদূর গিয়ে আবার ঘুরে এসে বলল এভাবে গিয়ে জানালে তখন কি বলতে কি বলবে ঠিক নাই। দেখি আমরাই কোনভাবে খোজ নিতে পারি কি না। তখন তোমার বান্ধবীর নম্বর জোগাড় করে তাকে ফোন দিলাম যে দেখো ভাইয়া শ্রাবণী তো এরকম পাগলামি করে ফোন বন্ধ রাখছে , একটু ওর বাবাকে বা বাড়ির পাশের কাউকে ফোন দিয়ে খোজ নাও তো কি হয়েছে , তোমার বান্ধবীর হাত পা ধরলাম, সে বলল জানাচ্ছি। অনেকক্ষণ হইয়ে যায় তোমার বান্ধবী কোনো খোজ দেয়না ,আমি আবার ফোন দিয়ে বলি , সে বলে কই আর ফোন বন্ধ কোনো খোজ পাচ্ছিনা। আমি আবার বললাম একটু খোজ নাও প্লিজ।
এমন করতে করতে দুপুর হইয়ে যায় কোনো খোজ নাই , ভয়ে আমার জীবন শেষ প্রায় যে কি করলে তুমি। ইতিমধ্যে তোমার ফোন আসলো , আমি আমার মা কে ডাক দিলাম যে মা শ্রাবণী ফোন দিছে । আমি ফোন ব্যাক করলাম , তোমায় জিজ্ঞেস করলাম এসব কি দিছো তুমি, আর কি করেছো তাই বলো, তুমি বললে “আমি কিছুই করিনাই এগুলা , খাইতে গেছিলাম কিন্তু সাহস হয়নি “। আমি বললাম শুয়োরের বাচ্চা সবকিছুর একটা লিমিট আছে , এমন কিছু কেউ কারোর সাথে করে। আমি বললাম তুই আমার মায়ের সাথে কথা বল, তোর কি সমস্যা সব বলেক। আমার আম্মু ফোন নিয়ে , তরে বললো “”তুই সব কি শুরু করেছিস বলতো, আমার একটাই ছেলে , তুই এরকম করে যদি আমার ছেলে কিছু করে ফেলে তখন কি হবে। তোর যদি বিয়ে হওয়ার এতই ইচ্ছা তাইলে তুই তোর বাবা মা কে বল এসে আমাদের সাথে কথা বলে বিয়ে দিয়ে দিক। আমি কি তোকে কোনোদিন ও বলেছি যে তরে মানব না, তোর বাবা ই বিয়ে দেবে না আমার ছেলের সাথে এখানে আমরা কি করতে পারি বল। তুই আমার আবার সাথে কথা বল এখনই, এরকম না করে বিয়ের ব্যবস্থা করুক তারাতারি।””
(এখানে একটি বিষয় উল্লেখ্য যে আমি আমার আম্মু বা আমার ফ্যামিলির কাউরে বলিনাই , যে তুই এখান থেকে যাওয়ার পর কি কি করছিস, এগুলা জানলে তারা তোর সাথে খারাপ ব্যবহার করতেই পারে।)
আমি আমার নানার নম্বর তোরে এসএমএস করে দিলাম , আর বললাম যে তুই নানার সাথে কথা বল নানা বিয়ের ব্যবস্থা করবে। এই বলে আমি আর আমার আম্মু অপেক্ষায় আছি । তুই কথা বলেছিস, আমার নানা তোরে বলছে যে , “”তুই এরকম পাগলামি কেনো শুরু করছিস , আমরা তো কখনও বলিনি জেবিয়ে দেবোনা বা তোরে মানব না। তুই এখন এক কাজ কর , তোর বাবা মা কে থাকলে ফোন দেয় আমি কথা বলতেছি, অথবা তুই নিজেই তাদের কে জানা যেনো তারা এসে আমাদের সাথে কথ বলে বিয়ের ব্যবস্থা করে।”””
ইতিমধ্যে নাকি তোমার মা এসে তোমার থেকে ফোন নিয়ে আমার নানার সাথে কথা বলে , বিভিন্ন ধরনের অপমান শুরু করে, এমন কথাও বলে যে , আমার মেয়ে যদি মারা ও যায় করো কাছে কোনো দাবি নাই, তবুও আমার সাথে তোমার মা কোনোদিন ও বিয়ে দেবে না। তুমি নাকি আমার বাড়িতে আসলে ভাত পাবেনা, আমরা গরীব। আরো নানান ধরনের কথা বলে অপমান করে , আমার নানা একটা কথাই বলে তোমাদের যদি লোকজন থাকে নিয়া আসো আমাদের এখানে বসে বিয়ের ব্যবস্থা করা হবে , কারণ তোমার মেয়ে পাগলামি করতেসে। তোমার মা আর অনেক কথা শুনিয়ে ফোন কেটে দেয়।
আমার নানা তখন ফোন দিয়ে আমার সাথে কথাই বলল না, আমার আম্মুকে বললো, তোর ছেলের জন্য আর কত নিচে নামবো, একটা মহিলা মানুষও আমাকে এত অপমান করলো , জীবনে কারকাছে কোনোদিনও নিচু হতে হয়নি আজকে তোর ছেলের জন্য আমার এই অবস্থা। নানা আম্মুকে এটাও বললো যে, ওর মেয়ে কিছু না করেই এমনিতেই নাটক সাজাইলো আর তোর ছেলে এতেই পাগল হইয়া গেলো, আমি আর কাউরে কিছু বলতে পারব না, তোর ছেলেকে বলিস মনুষের মেয়ে বের হইয়ে যায় , এবার যেনো তোর ছেলে বের হইয়ে ওর কাছে যায়, ওর নাকে দড়ি দিয়ে ঘুরাবে।
এসব কিছু শোনার পরে আর কি মনে চায় বলো তুমি।
একটু পরেই নানা আবার ফোন দিলো, তোমার বাবা একটু পরেই ফোন দিয়ে গালাগালি করেছে, এমন কথাও বলেছে যে বলার মত নাহ। আমরা নাকি যৌতুক চাইছি , আবার আমি নাকি তোমাকে কি করেছি, এই সেই। হয়তো কোনো বাবার মুখে এসব কথা কোনোদিন ও আসবে নাহ, সে যদি মেয়ের বাবা হয়। তোমার বাবা আর বলে , আমাকে জেলের ভাত খাইয়ে ছাড়বে , আমার জবি জমা বিক্রি করিয়ে ছাড়বে। দরকার পড়ে নিজের মেয়েকে মেরে হইলেও আমায় দেখে নিবে 😅। নানা একটা কথাই বলেছে , তোর যদি মনে সৎসাহস থাকে তাইলে এসে আমার সাথে বিয়ের কথা বল, আর না থাকলে আর নাটক করিস নাহ। তোর যা খুশি কর । তোমার বাবা আর অনেক অপমান করে ফোন কেটে দেয়। আর এতকিছুর পর আমার মা নানা সবাই আমাকে খুব ভালো করেই বাস দিলো, আর দেওয়াটাই স্বাভাবিক, আমি সব কিছুর বিশ্বাস করতে করতে এত নিচে নেমে গেছি , আর তার ফল পাইলো আমার ফ্যামিলি।
যাইহোক, আমি যে তোমায় সারাদিন রাতভর বুঝাইলাম, তুমি কিছুই কিছুই বুঝলে নাহ। আসলে কিন্তু ভুল টা তুমিই করেছিলে , আর আমি শুধু ভালোবাসা দিয়ে তোমায় বুঝিয়ে আগলে রাখতে চাইছিলাম। কিন্তু নাহ, তুমি কাহিনী সাজাতে সাজাতে এত দূর নিয়ে গেলে যে আমি আবারও হার মানতে বাধ্য হলাম। তুমি যে কাজটা করলে , এই আজকের দিনটায় শুধু, আমার বিশ্বাস নিয়ে খেলা করলে , আমার ভালোবাসা নিয়া পুতুলের মত খেলা করলে । দেখো এত কিছুর পর আমি কিন্তু শুধু তোমাকেই ভালবাসি জন্য আমার বাড়িতে এসে বলেছিলাম , তুমি পাগলামি করতেছ , পাগলামি বন্ধ করতে বিয়ে করে নিবো তোমায়। মনে করেছিলাম তুমি সব বুঝো , কিন্তু আমি আবারও ভুল ছিলাম ।
১২ নভেম্বর দুপুর পর থেকে আবারো ভাঙ্গা মন নিয়ে কথা বন্ধ হলো। রাগ হলো তোমার ওপর ,তোমার বাবার এবং মায়ের ওপর। কিন্তু জানতাম নাহ নিয়তি আমার সাথে এমনটা করবে। তারপরে তোমার বাড়িতে কি হয়েছে আমি কিছুই জানিনা , জানতেও পারিনাই। ১৩ তারিখ সকালে তোমার সাথে যে ছেলের বিয়ের কথা হয়েছিল সেই তোমাদের অনেক সম্পত্তি ওয়ালা পাতানো ধর্ম আত্মীয়, আমাকে ফোন দিয়ে অনেক গালি গালাচ করতে শুরু করলো, আমি কিছু বুঝে উঠতে পারলাম নাহ, আমার আম্মুকে নিয়ে গালি দিলে আমিও আর থেমে থাকি নাহ , সে বললো, তুমি নাকি বিষ খাইছো হাসপাতাল ও ভর্তি আছো। আর জন্য নাকি আমি দায়ী 😅।
আমি তারে গালি দিলাম ঠিকই কিন্তু আমার মনে কেমন যেনো হইয়ে উঠলো, আমি কান্না শুরু করলাম। একটু পরেই তোমার বাবার ফোন আসলো, আমাকে যত রকম হুমকি পারলো তাই দিলো, আমি সামনে গেলে আমায় মেরে ফেলবে আরো নানান কথা, কিন্তু বুঝে উঠতেই পারতেছিলাম নাহ আমি করেছি টা কি। তোমাকে এত এত ভালোবাসাই কি আমার অপরাধ হইয়ে দাড়ালো। তোমার বাবার এই কথা আমার মা সব শুনেছে, এবং অনেক ভয় করতেছিল, আর ভয় করাটাই স্বাভাবিক তোমার বাবা একজন ____মার্ডার মামলার আসামি___ আর এজন্যই তোমাদের সাথে আত্মীয় করতে চাইতো না আমার পক্ষের কেউ। কিন্তু আমি তো আর তোমার বাবা কে দেখে তোমায় ভালোবেসে ছিলাম না।
এসব শুনে আমাকে কিছুতেই যেতে দিলো নাহ, আমিও বাবা মায়ের একটাই ছেলে তারও ভয় পায়, আমি একদম ভেঙে পড়েছিলাম, আমার পাশে থেকে কেউ কখনও এক ধাপ ও সরেনাই, বিশেষ করে আমার মা। তুমি নিজে একটা ভুল করেছো আমি যেনো কিছু করতে না পারি সবাই সাবধানে রাখলো আমায়। আমি বিছানায় পরে গেলাম।তুমি যে বিশ খাইছো এটা আমি মানলেও, আমার বাবা মা মাতে চাইলো নাহ, আর না মানা তাই স্বাভাবিক ছিল , কারণ তুমি ওইটা নিয়েও আমাদের সকলের সাথে অভিনয় করেছিলে।
ইতিমধ্যে তোমার বাবা আমার নামে থানায় অভিযোগ করে আসে , আর সন্ধ্যায় আমার বাড়িতে পুলিশ আসে, আসার আগেই বুঝতে পেরে আমাকে বাড়ি থেকে দূরে দেয়া হলো , আমি তোমার চিন্তায় মগ্ন ঘুমের ঔষধ খেয়ে নিচ্ছি ২ টা ছিল সবাই কে লুকিয়ে। আবার পুলিশ এ ধরলে তো সমস্যা বেড়েই যাবে। আমি অন্য এলাকায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম, ঘুম থেকে তুলে আমায় নিয়ে বাস এ উঠায় দিলো আমি কিছু বুঝতেছিলাম নাহ, কেমন যেনো পাগল হইয়ে গেসিলাম, ঢাকা গিয়ে রাত ৩ টা তে নেমেছি, রাস্তায় ঘুরতেছি পাগলের মত, ভির এ একজন কাছের মানুষ এর বাসায় উঠলাম , ঘুম নেই । একটু রেস্ট করে , জোর করে খাবার খাওয়ালো, তারা কাজে যাবে আমি বের হইয়ে হাটা ধরলাম , ঐখানে থেকে বন্ধুর বিষয় গেলাম ২ ঘণ্টা পর।
ঐখানে গিয়ে একটু পরেই তোমায় বড় বোন ফোন দিলো, আমাকে নানান কথা শোনাইলো, তারপর তোমার বাবা ফোন দিলো এত হুমকি এত ভয় দেখাইলো , সেদিন আমার রাগ হয়ে গেলো তোমার বাবার ওপর , আমিও সব কথার উত্তর দিলাম। সবার ওপর রাগ হলো, কেউ তোমার খোজ দিলো নাহ, সবাই আমাকে শুধু হুমকিই দিলো কেউ তোমার অবস্থা বা খোজ দিলো না। আমার খুব রাগ হলো , এই বাড়িতে ফোন দিয়ে বললাম কোনো কিছু ভয় করিনা , আমি পুলিশ এর কাছে যাবো কি সমস্যা সব খুলে বলবো আমায় ধরে ধরবে। দুপুরে গাড়িতে উঠলাম, রাত ৮ তে আমায় অগ্রান নামায় দিলো, যেদিন আমি গাড়িতে উঠায় দিলো সেদিন কাছে অনেকেই ছিল ,কিন্তু আমি এসে নামার পরে সবাই দূরে চলে গেছে এতক্ষণে, আমি কাউরে পেলাম না যে আমারে ঐখানে থেকে নিয়ে আসবে। দূরে যাওয়াটাই স্বাভাবিক তারা অনেক নিষেধ করছে তোমার সাথে কথা না বলতে , কিন্তু আমি সবার কথা না শুনে তোমার কথা ভেবেছি।
যাইহোক ঐখানে থেকে হাটা ধরলাম , অনেক রাস্তা হেঁটে আসার পর আমার বাবা আমাকে নিয়ে আসলো বাড়িতে। কিন্তু আমি তোমার কোনো খোজ পারিনাই। আমি বাড়িতেই থাকলাম , শুক্রবার আমি শুইয়ে কান্না করতেছি, আর হঠাৎ তুমি ফোন দিলে , আমি ধরতেই করুন শুরে বললে “তুমি একবার আসো আমি আর বাঁচবো না , আমি তোমায় একটা বড় দেখবো” আমি বললাম তুই কেনো এমন করলি রে আমায় শেষ করে দিলি এমন করে, আমি বললাম তুই কথায় এখন আমায় বল, এটা বলতেই ফোন কেটে দিলো।
আমি তোমার খোজ নিতে তোমার সেই বান্ধবীর সাথে যোগাযোগ করি । সে তো তোমার কোনো খোজ দিলই না , আরো সব জায়গা থেকে আমায় ব্লক করে দিলো। আসলে এইযে সবকিছু পেছনে তার অনেক বড় কর্তব্য ছিল, তাই এমন করলো। খোজ পেলাম তুমি রাজশাহী ছিলে , সেখান থেকে নিয়ে আবার বনপাড়া তে আনছে, তুমি এখন অনেক্টাই সুস্থ, তুমি পুলিশ এর কাছে স্টেটমেন্ট ও দিয়েছো , কিন্তু কি বলেছো আমি জানিনা। পুলিশ আমাদের অনেক ঝামেলা শুরু করে , আমি নিজে যাওয়ার কোনো পথ পারিনাই তোমার কাছে, সবাই এটা ভেবে যেতে দেয়নি আমি গেলে তোমার বাবা হয়ে মারবে, নয়তো পুলিশে দেবে। এভাবেই চলছে আমি ভেতরে থেকে পুড়ে কয়লা হইয়ে যাচ্ছি।
নভেম্বর ২৪ তারিখ আবার পুলিশ আসলো, আমি আবার সাইডে চলে গেলাম, শুনলাম পুলিশ এসে বলেছে থানায় গিয়ে যোগাযোগ করতে একটা ব্যবস্থা করবে তাইলে। আমরা জানতে পারি ২৩ তারিখ তোমার বাবা মামলা চূড়ান্ত করে এসেছে, এত খারাপ একটা মামলা করছে যা বলার মত নাহ, আমি নাকি তোমায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করেছি 😓।
পুলিশ চলে যাওয়ার ৫ মিনিট পর আমি খবর পাই , তুমি আমায় রেখে চিরদিনের জন্য দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেছো, এটি আমার নিয়তি। আমি সত্যি বিশ্বাস করতে পারতেছিলাম না যে এটা হইছে। আমার মধ্যে কোনো ফীল আসতেছিল নাহ। অনেকক্ষণ আমি স্তব্ধ। যখন আমার জ্ঞান হলো আমি দুনিয়ার সব হারিয়ে ফেলেছি, সত্যি তোমার জন্য একটুও কান করিনাই, মী এখনো হাসি , তখন ও হেসেছিলাম। এইযে আমার আর তোমার সম্পর্কের মাঝে অংক কিছুই ঘটে গেছে কিন্তু আমি সব সময় তোমার সব ভুল ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখতে চাইছি। আর তুমি আমায় মন ধোঁকা দিয়ে গেলে যার কোনো মূল্য দুনিয়াতে আর নেই। কি হয়েছে বলো, তুমি তো এই দেহটাই ত্যাগ করেছো, আমি তো তোমায় ভালবাসি রে, হয়তো দেহ নিয়ে আমার হইয়ে পারনি, কিন্তু ত্যাগ করার পর তুমি আমার আরো কাছে এসে গেছো । এখন তোমার বাবা মা কেউ আটকাতে পারবে না। কেউ কিচ্ছু করতে পারবে না।
তুমি এভাবেই আমার সাথে থেকে সারাজীবন আমার সাথ দিও, আমি বিশ্বাস করি এখনো তুমি কোথাও যাওনাই। তুমি সব সময় আমার সাথে মিশে আছো। ঐযে সেদিন এর কথা , তুমি আমায় ছেড়ে চলে যাওয়ার দ্বিতীয় দিন ভোরের আযান এর সময় আমার স্বপ্নে আসলে , তুমি একটু অভিমান করে আছো, আমি তোমার কপালে , দুই গালে চুমু দিলাম , তুমি তখন আমার দিকে একটু তাকালে আর অল্প একটু হাসলে । আমি তোমায় বললাম “কেউ তোমায় বুঝিনাই, আমি ঠিকই বুঝেছি” এটা বলার পর তুমি মুচকি হাসি দিয়ে চলে গেলে । আমার ঘুম ভেংগে গেলো, আমি বিশ্বাস করি তুমি এভাবেই আমার সাথে থাকবে সারাজীবন। তোমার আর আমার ভালোবাসা কেমন ছিল সেইটা আমি আর তুমি আর আল্লাহ্ জানে। তুমি হয়তো আমায় বিশ্বাস করতে পারোনাই, আমি তোমার সকল কিছু ভালোবাসা দিয়ে ঠিক করতে চেয়েছি আর তুমি সেটাই হয়তো বুঝনি পাগলামি করেছো অনেক বেশি।
ঐযে কথায় আছে কেউ যদি বিশ খাওয়া বা মোর যাওয়ার কথা ভাবে , তার পেছনে শয়তান ততক্ষণ লেগে থাকে যতক্ষণ না সে সেই ভুল টা না করে।
তোমার বাবার সেই মামলায় আসামী করা হয়েছে ১ নং আমায় , ২ নং একজন অজ্ঞাত নাম যাকে আমি কোনোদিন দেখিও নি , নাম ও শুনিনাই। ৩ এবং ৪ নং আমার বাবা আর নানা।
তোমার এই বিশ খাওয়ায় বিষয়টা, আমি যতদূর শুনেছি, আমার নানার সাথে কথা বলার পরে, তোমার বাবা মা তোমাকে অনেক মারধর আর অত্যাচার করে, এমন এক পর্যায়ে তোমার বাবা নিজে তোমার হাতে বিষের বোতল দিয়ে বলে বিশ খা, এবং উনাদের সামনেই বিশ খাও তুমি। তোমার বাবার আর মায়ের মাথায় তখন কি কাজ করেছে আমি জানিনা। পৃথিবীর কোনো বাবা মা কি আসলেই এমন হয় আমার জানা ছিল নাহ। (এই কথাগুলো যে আমি শুনে বলেছি বা , বানিয়ে বলেছি তা না। এই কথাগুলো তোমার নিজের মামার মুখে থেকে বের হয়েছে।
এখন আর বলতেও কষ্ট লাগে , তোমায় ভালবেসে আজ আমি তোমার কাছেই দুষী। এত খারাপ অভিযোগে অভিযুক্ত সেইটা মুখে আনতেও কষ্ট হয় আমার। আমার সাথে আমার বাবা আমার নানা।
নিয়তির কি খেলা দেখেছো, তুমি অনেক আগে আমায় বলেছিলে একদিন “আমি চলে গেলে তুমি আমায় দেখতেও পাবে না ছুইতেও পারবে নাহ” শেষ বেলায় তোমার কোথায় সত্যি হলো। শেষ সময়ে আমি তোমার কাছে ছিলাম নাহ। তুমি আমায় চিরদিনের জন্যে যেই ব্যথা দিয়ে গেলে সেইটা সারাজীবন আমার নিশ্বাস থাকা পর্যন্ত বয়ে নিয়ে বেড়াতে হবে। আমি তোমার সামনে যেতে পারিনাই, তাই তুমি আমার কাছে চলে আসলে।
তাই এখন এভাবেই আমার সাথে থাকো, দেখো আমি যুদ্ধে নেমেছি , আর এই যুদ্ধ আমার বাঁচার জন্য নয়। তুমি দুনিয়া থেকে চলে যাওয়ার পরেও তোমার সম্মান নিয়ে টানাটানি করতেছে সেই বাবা নামের জানোয়ার। সে বাবা হইলে এসবের জন্য একবার হইলেও প্রাণ কেড়ে উঠতো। আমার একটাই ভুল তোমারে এত ভালোবাসা , আর এর জন্য আমার যত শাস্তি ভোগ করা লাগে আমি করবো। তুমি আমায় আপন করার জন্য দুনিয়া থেকে চলে গেলে, আমি সব শাস্তি ভোগ করবো তোমার জন্য। আমার জেল ফাঁসি যা হয় মেনে নিবো, কিন্তু তোমার সম্মান নিয়ে যে খেলা করতেছে এই বিচার একদিন হবে। আল্লাহ্ তায়ালা সব জানেন সব দেখেন।
সত্য কখনোই গোপন থাকবে নাহ, আর সেই সত্যটা হচ্ছে “”আমি তোমাকে ভালোবাসি”” এর থেকে বড় সত্যি দুনিয়াতে নেই।
তুমি এভাবেই আমার সাথে থেকো আর দেখো সত্যর জয় একদিন হবেই। আমার আর তোমার ভালোবাসার মাঝে কোনো ভুল ছিলোনা, এটাই একদিন সামনে আসবে । পুরো দুনিয়া দেখবে , তোমার সেই বাবা নামের শয়তান ও দেখবে।
দুনিয়াতে ভালোবাসার নিয়তি এত খারাপ হবে কখনও ভাবিনাই। হিসেবে তো তোমার সাথে আমার ও চলে যাওয়া উচিত কিন্তু আমি চলে গেলে কোনো কিছু প্রকাশ পাবে নাহ। তুমি দুনিয়া থেকে চলে যাওয়ার পরেও তোমার নামে যে কলঙ্ক দিয়েছে তোমার নিজের বাবা সেইটা মুছতে হলে আমাকে যুদ্ধ করতে হবে অনেক। তুমি আমার পাশে থেকে আমাকে যুদ্ধের জন্য তৈরি করবে আর সত্য দেখবে দুনিয়া।তুমি আমার শ্রাবণী তোমার নামে এই কলঙ্ক দেখতে পারবো না।
হয়তো আমার অনেক ভুল আছে যার কারণে আজকে তুমি আমার থেকে বহুদূর সবাই এটাই ভাবে। কিন্তু তুমি তো আমার ভেতরে এটা কেউ জানে নাহ।
“”””আমি তোমাকে ভালোবাসি, ভালোবাসি, আর আমার জীবন যতদিন থাকবে ততদিন আমি তোমাকেই ভালবাসবো। “”””
এর জন্য দুনিয়ার যেই জেল এ যাইতে হয় আমি যাবো, যেই আদালত এ দাঁড়াতে হয় দাঁড়াবো। তোমার আমার ভালোবাসা কতখানি পবিত্র এটি প্রমাণ করতে গিয়ে আমার ফাঁসি হলেও হবে ,আমি কোনকিছুতেই ভয় করিনা। তুমি আমার শক্তি , তুমিই আমার শক্তি।
আমি চাই আমার যেসকল ভুলের জন্য তুমি আমাকে পাওনি, সেগুলার জন্য তুমি আমায় কখনও ক্ষমা করিও না। কিন্তু অভিমান করে থাকিও নাহ। আমি বড় পাপি তুমি অভিমান করলে তো আমিও শেষ হইয়ে যাবো।
__________________________________________
ডিসেম্বর ১-২ তারিখ আমি থানায় আত্মসর্পণ করবো ,তারপর আমার যা হয় হবে আমি কোনো কিছু ভয় করিনা। আমি আর তুমি কোনো ভুল করিনি কখনও এটা প্রমান করতে মার আত্মসমর্পন করাটা অনেক জরুরী। আইন থেকে যত দূরে থাকবো ততই সবাই মনে করবে আমি আর তুমি অনেক বড় আসামী। তাই আমি সকল পিছুটান ফেলে আত্মসমর্পন করতেছি।
__________________________________________
পাঠকদের উদ্দশ্যে বলতে চাই: যে বা যারা আমার এই গল্প বা ঘটনা পাঠ করেছেন , তারা সবাই আমাকে ক্ষমা করবেন, এখানে অনেক ভুল ত্রুটি থাকতে পারে। আপনারা এটিও মনে করতে পারেন যে এটি তো এক তরফা একটি ঘটনার বিবরণ মাত্র, অন্যদিকটা আলাদা হতে পারে। তাই আপনাদের এটি বলতে চাই, আমি আর আমার প্রিয়তমা আলাদা কেউ না। তবুও দুনিয়া এসকল আবেগী কথা মনে না দুনিয়া চায় প্রমাণ। সবকিছুর প্রমাণ আমার নিজ মোবাইল INFINIX NOTE 40 PRO এই মোবাইলে ওই গেছে, এবং আমার প্রিয়তমার মোবাইল এবং তার লেখা চিঠি তার খাতায় রয়ে গেছে , যদি তার বাবা মা বা কেউ যদি নষ্ট না করে। আর এসব কিছুর সাক্ষী আমার মা, বাবা, নানা, আত্মীয় এবং বন্ধুবান্ধব গণ। আর তার পক্ষের সবাই।
আরো কিছু বলতে চাই,
আপনারা যারা সম্পর্ক করেন বা করবেন , তরে উদ্দেশ্যে। আমার মত ভুল করবেন না কেউ , মেয়ে হোক বা ছেলে হোক তার পিতৃ পরিচয় এবং মাতৃ পরিচয় সকল কিছু মাথায় রেখে সম্পর্কে যাবেন। নইলে আমার মত বিশ্বাস হারাবেন, সম্মান হারাবেন, মায়া মমতা , বন্ধুত্ব, আত্মীয় স্বজনের ভালোবাসা স্নেহ , বন্ধন , নিজের ওজন , সর্বশেষ যাকে ভালোবাসবেন তাকেও হারাবেন , সারাজীবনের সকল সম্বল হারাবেন , বেচে থাকার সকল ইচ্ছা হারাবেন।
(পাত্র বুঝে ভালোবাসা দিতে হবে) আমি হয়তো পাত্র না দেখেই সব ভালোবাসা ঢেলে দিয়েছিলাম তাই ওজন টা রাখতে না পেরে সব শেষ হইয়ে গেলো।
জানিনা আমার জীবনের সামনে কি আছে , তবে যা ই আছে আমি সব কিছু মেনে নিবো।
যে বা যারা আমার এই গল্প টা পড়লেন, তারা ছোট হিসেবে দেখে এখন থেকে শিখার আর বুঝার অনেক কিছু আছে তা খেয়াল রাখবেন।
আপনাদের কাছেই আমার সব কিছু রাখলাম আপনারাই বিচার করবেন , এতে আমার কোনো ভুল থাকলে নির্দ্বিধায় নিচে কমেন্ট অপশন এ জানাবেন ।
সবাই আমার আর আমার প্রিয়তমা, আমার ময়নার জন্য দোয়া করবেন , সে যেনো এই কলঙ্ক থেকে মুক্তি পায়। আল্লাহ্ যেনো তাকে বেহেশত বাসী করে।
আমার মত এই পাপী আর অভাগার জন্য দুয়া করবেন। আমি এই কলঙ্ক থেকে তার নামের মুক্তি দিতে পারলে আমি নিজেও মুক্তি পাবো। হায়াত মউত এর কথা বলা যায় নাহ , যদি কারোর কাছে কোনো ভুল করে থাকি মাফ করলে মন থেকে করে দেবেন মনে রেখে দেবেন , আল্লাহ্ ই আমার বিচার করবে।
অসংখ্য ধন্যবাদ আমার মত এত পাপী মানুষের লেখা পড়ার জন্য , সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে এখানেই শেষ করলাম।
আমি তোমায় অনেক বেশি ভালোবাসি আমার জান 🖤😊 ,তোমাকে আমার কাছ থেকে তারা কেড়ে নিয়েছে , আমি কখনও তাদের ক্ষমা করবেনা।